শ্রী রাম মাহাত্ম্য

সীতারাম শরনম

রাম-নাম মাহাত্ম্য —-

বটবীজস্হঃ প্রাকৃতশ্চ মহাদ্রুমঃ।
তথৈব রামবীজস্হং জগদেতচ্চরাচরম্।।

যেরূপ প্রাকৃত মহান বটবৃক্ষ বটবীজের মধ্যেই অবস্থান করে, তদ্রূপ এই স্হাবর-জঙ্ঘমাত্মক জগৎ রামবীজে অবস্হিত।

উচ্চৈঃস্বরে রাম-নাম কীর্ত্তন জন্ম-জন্মান্তরের সঞ্চিত বহুপ্রকার অজ্ঞানরূপ ভববীজকে বিনষ্ট করে, তজ্জন্য তা আর অঙ্কুরিত হতে পারে না। রামনাম ইহলোক পরলোক সম্বন্ধীয় সুখের প্রাপক। যমদূতগণের ভর্ৎসনাকারক রামনাম শুনলে যমদূতগণ ভীত হয়ে পলায়ন করে।
ভগবান শঙ্কর নিজে পঞ্চমুখে রাম নাম জপ করেন কিনা, কাজেই রাম নামটি তাঁর প্রিয়। তিনি বলেছেন—

অহং ভবন্নাম গৃণন্ কৃতার্থো
বসামি কাশ্যাং সহিতো ভবান্যা।
মুমুর্ষমাণস্য বিমুক্তয়েহহং
দিশামি মন্ত্রং তব রামনাম।।
——— অধ্যাত্মরামায়ণ

হে রাম— আমি তোমার নামগ্রহণ করে কৃতার্থ হয়ে ভবানীর সহিত কাশীতে বাস করি। মুমুর্ষুগণের মোক্ষকামনায় তোমার রাম নাম মন্ত্র তাদের দান করি।

এই মন্ত্র জপ করে অগস্ত্য রুদ্রত্ব, কাশ্যপ ব্রহ্মত্ব, কৌশিক ইন্দ্রত্ম প্রাপ্ত হয়েছিলেন। কার্ত্তিকেয়, মনু, ইন্দ্র, সূর্য্য, গিরি, নারদ, বালখিল্যাদি মুনিগণ দেবত্বলাভ করেছিলেন।
অবশভাবে যদি কোন ব্যক্তি রাম নাম কীর্ত্তন করে অথবা কারও স্মৃতিপথে রাম নাম উদিত হয়, সেই ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে পাপ-বিমুক্ত হয়ে পরমপদ লাভ করে।
অবশভাবে— অর্থাৎ ইচ্ছাপূর্ব্বক নয়। কোন স্হানে নাম হচ্ছে– সেই নাম শুনে অন্যমনস্কভাবে নাম উচ্চারণ করলে বা স্মরণ করলেও তার জন্য বৈকুন্ঠদ্বার মুক্ত। আর যাঁরা ইচ্ছাপূর্ব্বক ভক্তিভাবে নাম করেন, তাঁদের কথা আর কি বলা যাবে!
এমন রাম-নামের মহিমা, তথাপি রসনা জপ করে না। রতি হোক্ আর নাই হোক্ চালাও জপ—

ইহা বিনা পাপীর নাহিক পরিত্রাণ।
রাম নাম শুনিবেক পাপী সাবধান।।
চারিবেদ অধ্যয়নে যত পুণ্য হয়।
একবার রাম-নামে তত ফলোদয়।।

শ্রীরাম জয় রাম জয় জয় রাম।

জয় শ্রীশ্রীসীতারামদাস ওঙ্কারনাথ।।

Leave a Reply

%d bloggers like this: