কৌস্তভ ঘোষ
যাকে খূঁজে বেড়াচ্ছো তুমি, সে তোমার ভেতরে আছে।সে সব জায়গাতে অতীতে ছিল,বর্তমানে ও আছে,ভবিষ্যতে ও থাকবে। তাঁকে খূঁজতে হয়না, চিনে নিতে হয়।
আত্মজ্ঞান আসলে সেই আত্মদর্শন যার দ্বারা আমাদের ঈশ্বর দর্শন হয়। যে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারে, সেই অন্যকে বিশ্বাস করতে পারে। সে সেই বিশ্বাসের দ্বারা অন্যের বিশ্বাস অর্জন করতে পারে ও ভগবানের প্রতি বিশ্বাস তার দৃঢ় হয়। সর্বশেষে ভগবানের প্রতি এই দৃঢ় বিশ্বাস তাকে ভগবানের বিশ্বস্ত করে তোলে। তাই তাকে তখন থেকে সবাই তাঁকে বলে সম্বোধন করে।
এটা আমার অনুভূতি, অভিজ্ঞতা তথা নিজের আত্মদর্শন। যে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারে না সে কোনোদিন নিজের কোনো হিত কর্মে নিজেকে পাশে পাবে না তাই সে কোনোদিন জনকল্যাণ করতে পারবে না। সে নিজেই নিজের কাছে হয়ে উঠবে অজানা। নিজেকে না জানা বা চেনার জন্য মানুষ মরীচিকার পিছনে ঘুরে বেড়াতে থাকবে। নিজেকে ভুলে যাবে সে, কারণ তাকে হয়ে উঠতে হবে অন্যের মনের মতো। তাতেই সে পায় আত্মসন্তুষ্টি। এখান থেকেই ভুল করতে শুরু করে সে।
যখন সে নিজেকে চিনতে পারে, শুধু তখনই সে বুঝতে পারে কে সত্যিকারের আপণ আর কে ভেক ধরে আপণ হবার অভিনয় করে। সে তখন ই বুঝতে পারবে সত্যিকারের হিতৈষী আসলে কে।
গীতাতে তাই বলা হয়েছে মানুষ নিজেই তার পরম মিত্র ও পরম শত্রু হতে পারে। পৌরানিক যুগ থেকে ঋষি মুনিরা জোর দিয়েছেন নিজেকে চেনার ব্যাপারে। আমি কে, কেন এসেছি, কোথা থেকে এসেছি, লক্ষ্য কি, শেষে কোথায় মিলিয়ে যাব এই সব কিছুর উত্তর নিজের ভেতরেই আছে সুপ্ত ভাবে। নিজেকে বিশ্বাস, নিজের উপর ভরসা রাখার মাধ্যমেই শুরু হয় ভগবান লাভের তথা আধ্যাত্মিকতার পথে উত্তরণ। আত্মদর্শন-নিজেকে সঠিক চিনতে পারলে ভগবান কি তা জেনে যাওয়া যায়। আত্মদর্শন সৃষ্টি ও স্রষ্টাকে মিলিয়ে এক করে দেয়।
Leave a Reply