কৌস্তভ ঘোষ
ধর্মের নামে যে কোনো পশুবলি দুঃখজনক। হিন্দুদের মধ্যে ব্যাপক হারে একটা সময় নরবলি ও পশুবলির প্রচলন ছিল। তা অনেকটা কমে এসেছে।
নিজের ক্ষুণ্ণিবৃত্তির জন্য তথা প্রোটিন আহরণ এর উদ্দেশ্যে পশু মাংস খাওয়া আর ধর্ম পালনে পশু হত্যার আকাশ পাতাল তফাত। বিশেষত নিজের ঘরে প্রতিপালন করে, তার বিশ্বাস অর্জন করে সবাই মিলে তাকে কেটে খাওয়া।
খাবারের দোকানে যে মাংস টা মানুষ খায় সেটা নিজেরা কেটে খায় না। সেখানে veg/ non-veg বিকল্প থাকে। কোনো ধর্মীয় রীতির মত আবশ্যিক নয়।
আসলে আদি কাল থেকে মানুষ এর মাংসের প্রতি ভালবাসা যখন কোনো ধর্ম আলাদা করে ছিল না। পরে এসবের সাথে ধর্ম ও যুক্ত হয়।
তাছাড়া ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে যারা পশুবলি তথা কুরবানী করে তাদের জন্য বলি যে কোনো ধর্ম তো চুরি, মিথ্যা, মেয়েদের অসম্মান করা ও অপরাধ। তারা ধর্ম এর দোহাই দিয়ে সম্পূর্ণ সততার সাথে জীবন অতিবাহিত করে কি? তাদের মধ্যে কত জন পাঁচ ওয়াক্ত নমাজ পড়ে? মানুষ তো কুরবানির নাম প্রতিযোগীতা ও আজকাল করছে, ফেসবুকে তা নিয়ে লাইভ ও করছে। পাশের মুসলিম দেশ বাংলাদেশে সরকার থেকে এটা ও বারবার প্রচার করতে হয় যে তারা যেন কুরবানির দিন যেখানে সেখানে পশু বর্জ নিক্ষেপ না করে।
হিন্দু ধর্ম তে শুধুমাত্র তান্ত্রিক ও শাক্ত উপাসনা তে পশু বলির প্রথা চলে আসছে। পশু বলি নিয়ে যে ধর্মীয় যুক্তি দেওয়া হয় তা হলো ভগবান এর উদ্দেশ্যে পশু বলি দিলে সেই আত্মা পশু তথা নিম্ন যোনি থেকে মুক্তি পেয়ে আরো উর্ধ্ব দিকে গমন করে যা তাঁকে মনুষ্য পাওয়ার দিকে আরো অগ্রসর করে। কিন্তু আমরা মানুষ রা নিজেরা এরকম ভেবে নিজেদের ভগবান ভেবে ফেলি, যেখানে আমাদের মুক্তি যেটা english এ বলে complete libetation-সেটাই নিশ্চিত করতে পারি না বহু মনুষ্য জন্ম লাভের পর ও। যারা বিষ্ণু তথা বুদ্ধের উপাসক তারা মনে করেন পশুবলির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ তথা মুক্তি তো সম্ভব হয় না, বরং তাঁকে বারংবার জন্মচক্রে আবর্তিত হতে হয়।
অনেক কিছু জিনিস বিচার করা দরকার। যতদিন তা হবে না, যতদিন এই দেশে সেকুলারিজম এর নামে ভণ্ডামি হবে ততদিন এই দেশে অতি উগ্র দক্ষিণপন্থী রা থেকে যাবে। আমদের হিন্দু ধর্মে বলা হয়েছে-কিছুই অতিরিক্ত ভালো না।
যবে থেকে বাড়িতে কুকুর পুষি তবে থেকে পশু মাংস মুখে দিতে পারি না। ১৩ বছর পার হয়ে গেল।
ধর্ম এর একমাত্র একটি কাজ- মানুষের মধ্যে দেবত্ব এর উন্মেষ ঘটানো ও আধ্যাত্মিকতার উদ্দেশ্যে মানুষ কে নিয়ে যাওয়া।
Leave a Reply