Kaustav Ghosh
কেমিস্ট্রির বই গুলো ছিল আমার কাছে কবিতার মত। ঠিক প্রথম প্রেম যেমন হয়। অর্গানিক বা ইন অর্গানিক, যেন এক একটা ছন্দ। জানি না কবে থেকে তোকে ভালবেসে ফেলে ছিলাম। সেটা ক্লাস সিক্স সেভেন ছিল কিনা। সবে গোঁফ গজিয়েছে, ঝড় ঝঞ্জার কালে পদার্পণ। কেমিস্ট্রির সাথে যেন সাহিত্য সৃষ্টি করতে নেমেছিলাম আমি। পেরেছিলাম কেমিস্ট্রির সাথে আলাদা কেমিস্ট্রি থাকার জন্য। অঙ্কের সাথে অঙ্ক মেলাতে না পেরে কেমিস্ট্রি কেই করে ফেললাম জীবনের সব কিছু। রচনা করে ফেললাম যৌগ, মৌল, ধাতু নিয়ে কবিতা। জীবন কিভাবে এগোবে সবকিছুই যেন পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলাম নিজের তৈরী গবেষণাগার থেকে। এগিয়ে যাব নিজের ভালবাসা নিয়ে। আসলে খুব বোকা ছিলাম, খুব ই। প্রাইমারি থেকে যাদের সাথে জীবন এর এই যাত্রা টা শুরু করেছিলাম, তারা কবে ফেলে চলে গেছে নিজেদের গন্তব্যে। বুঝতেই পারি নি সেটা। আসলে কথা তো অন্য রকম ছিল। কথা তো ছিল একসাথে ওই বাসে ওঠা, গন্তব্য যে আলাদা ভাবিনি কখনো। জানিস মন, ওদের কাউকে কখন ও কাঁদতে দি নি। তাই ভাবি নি কেউ আমার চোখের জল দেখে এত খুশী হবে, এতটা খুশী। ওদের কে এই জলটাই উপহার দিয়ে ছিলাম। তারপর এলো একটা ঝড়। অবাক হয়ে দেখলাম কেমিস্ট্রি ও জীবন থেকে চলে গেল। ধ্বংস হয়ে গেল গবেষনা, পুড়ে ছাই হয়ে গেল কবিতার খাতা। এবার সবাই খুশী, কারণ ওরা ভেবেছিল আমি শেষ। ওরা আমাকে চেনেই নি, আসলে চেনার চেষ্টাই করে নে। চিনলে জানতে পারতো সেই ফুলটি কে। যে ধ্বংসস্তূপ থেকে বারবার জন্ম নেয়। সে জন্ম নিল সাদা জামা কালো কোর্ট পরে। নতুন রূপে নতুন ভাবে- সওয়াল জবাব করতে ন্যায়ের হয়ে। অবিচারের বিরুদ্ধে জারি তার বজ্রনির্ঘোষ। সে বদলে গেলেও সে আগের মত আজ ও চায় তাই- মন খুলে হাসুক আর প্রাণ ভরে বাঁচুক সব্বাই।
Leave a Reply to Dipta Dipak BanerjeeCancel reply